Skip to main content

শুভ্র, মা আর ভালোবাসা

শুভ্র ছাদে বসে আছে। হাতে কফির মগ। শুভ্র কফির মগে একটা করে চুমুক দিচ্ছে আর ভোর হওয়া দেখছে। আজ আবহাওয়াটা অনেক সুন্দর। কিছুক্ষণ পর পর একটা বাতাস এসে শুভ্রর চুল গুলো উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। শুভ্র কি যেন একটা ভাবছে। ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। এর মধ্যে জাহানারা বেগম ছাদে চলে আসলেন। এসেই বলতে শুরু করলেন।

“কিরে তুই এতো ভোরে ছাদে কি করিস? তোর শরীর খারাপ? জ্বর আসছে? কি হইছে বল না।”

বলেই তিনি শুভ্রর গায়ে হাত দিলেন। কপালে হাত রাখলেন। শুভ্র বলল,

“না মা। আমার কিছু হয় নি। সব ঠিক আছে। আমি ছাদে তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।”

জাহানারা তার ছেলের কপাল থেকে হাত সরিয়ে নিলেন। আর বললেন,

“আমার জন্য? তুই কি করে বুঝলি যে আমি ছাদে আসবো?”

শুভ্র তার মায়ের হাতটি ধরে আবার তার কপালে রাখলো আর বলল,

“মা, তুমি রোজ ভোরে লুকিয়ে লুকিয়ে আমার ঘরে এসে আমাকে দেখে যাও। আমি জানি। তাই আজ ইচ্ছা করে অনেক ভোরে ছাদে এসে বসে আছি এবং আমি জানি তুমি আমাকে আমার ঘরে না পেয়ে এখানে খুঁজতে চলে আসবে।”

বলেই শুভ্র তার মায়ের দিকে তাকিয়ে অসম্ভব সুন্দর একটা হাঁসি দিলো। জাহানারা মুগ্ধ হয়ে তার ছেলের দিকে তাকিয়ে আছেন। তিনি প্রায়ই ভাবেন, তার ছেলেটা এতো সুন্দর কি করে হলো? তিনি বললেন,

“বাবা, আমি এতো বোকা কেন রে? কেন আগে ভাগে কিছু বুঝতে পারিনা?”

তিনি কাঁদতে লাগলেন। শুভ্র বসা থেকে দাঁড়ালো এবং জাহানারাকে হটাৎ বুকে জড়িয়ে ধরলো। জাহানারার বুক ধকধক করতে লাগলো। তার চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। আর একটু হলেই তিনি হাউমাউ করে কেঁদে দিবেন এমন অবস্থা। শুভ্র বলল,

“মা, আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। অনেক। আমি মাঝে মাঝে বুঝিনা, তুমি আমাকে এতো ভালোবাসো কিভাবে? তুমি আমাকে ছেড়ে কখনো কোথাও চলে যেওনা।”

জাহানারার চোখ দুইটা টলমল করতে লাগলো। তিনি ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলেন না কি করবেন। তারপর তিনিও তার ছেলেকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন। আর বললেন,

“বোকা ছেলে বলে কি দেখো, তোকে ছেড়ে আমি কই যাবো। কোথাও যাবো না’রে। কোথাও না।”

শুভ্র এবার তার মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল,

“মা, আজ আমি তোমাকে রান্না করে খাওয়াবো। খাবে? তুমি যা খেতে চাও, তাই রান্না করে খাওয়াবো। খাবে মা?”

Comments

Popular posts from this blog

রহস্যময় ভালবাসা

ভুমিকা ভুমিকা সাধারনত উপন্যাসের হয় কিংবা রচনা জাতীয় কোনো লেখায় হয়। একটা গল্পের জন্য ভুমিকা লেখা হাস্যকর। তবুও লিখলাম। এই গল্পের সাথে বাস্তবের কোনো মিল নেই। এটা শুধুই কল্পনা দিয়ে লেখা। তবে নাম গুলোর অস্থিত্ত্ব আছে। ভুতের গল্প লিখতে চেয়েছিলাম। যে গল্প মাথায় ছিল সেটা তেমন ভয়ঙ্কর বলে আমার মনে হলো না। কিংবা আমি হয়ত ভয়ঙ্কর কিছু লিখতে পারতাম না। তাই লিখলাম না। আশা করি এই গল্পটা পড়ে খুব বেশি বিরক্ত হবেন না। যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে ধন্যবাদ। ভালো না লাগলেও ধন্যবাদ।  ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরী টুটপাড়া ঘোষের ভিটা, খুলনা ২০.০৯.২০১২  উৎসর্গ  একটা মানুষকে কি দুইবার উৎসর্গ করা যায়? এইটা সেই মানুষটার জন্য, যার কাছেই শুধুমাত্র আমি একজন লেখক। যার কাছে আমার ভালো কাজেরও মূল্য আছে, খারাপ কাজেরও মূল্য আছে। আমার অদ্ভুত আচরণে সে বিরক্ত হয়, আসলে সে মুগ্ধ হয় বলে আমার বিশ্বাস।  মানুষটা আমাকে অনেক ভালোবাসে, এত কেন ভালোবাসে, কিভাবে ভালোবাসে, আমি কিছুই জানিনা। আমার প্রিয় হলুদিয়া পাখি একটা মেয়ে কতটা সুন্দর হলে একটা ছেলে মেয়েটার দিকে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে? একটা মেয়ে ঠিক কতটা সুন্দর হলে

Veer Zaara

  Spoiler Alert শুরুতেই ইয়াশ চোপড়ার ম্যাজিকাল কণ্ঠে কবিতা। কবিতা শেষ হওয়া মুহুর্তেই সনু নিগম আর লতা গেয়ে ওঠে আমার প্রিয় সব থেকে ম্যাজিকাল গানটা, “কিউ হাওয়া আজ ইউ গা রা হি হে”। সনুর কণ্ঠের সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে স্ক্রিনে চলে আসে আমার প্রিয় সুপারস্টার শাহরুখ খান। সাদা জামা পড়ে সাদা নৌকায় ভেসে প্রকৃতির সাথে মিশে যাওয়ার দৃশ্য আমাকে আজও অনুপ্রেরণা দেয় প্রকৃতির সাথে এভাবে একাত্বতা ঘোষনা করার। মুভির শুরুতেই এই গান মনের মধ্যে একটা প্রশান্তি দেয়। মুভি দেখার আগ্রহ কয়েকগুন বাড়িয়ে দেয়।   এই গান শেষ হওয়া মুহুর্তেই দেখা যায়, বৃদ্ধ বীর প্রতাপ সিং স্বপ্নে জারা হায়াত খানকে গুলি খেতে দেখে ধরফর করে ঘুম ভেঙ্গে উঠে বসে। শাহরুখ খানের এই বৃদ্ধ চরিত্র তার ক্যারিয়ারে উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে থাকবে আজীবন। ২২ বছর ধরে বীর প্রতাপ সিং নিজেকে জেলে বন্দী করে রেখেছে। এই ২২ বছরে কারো সাথে একটা কথা পর্যন্ত বলেনি। শুধুমাত্র জারার সন্মান রক্ষার্থে। কেউ তার গল্প জানেনা। হঠাৎ একদিন সামিয়া সিদ্দিকি নামের একজন হিউমান রাইটস লয়ার এগিয়ে এলো এই বীর প্রতাপ সিং এর গল্প জানার জন্য। ২২ বছর ধরে যেই মানুষটাকে সবাই কয়েদী নম্বর ৭৮৬ ব

Anveshanam (2020)

No Spoiler মুভির নাম Anveshanam , এটি একটি মালায়ালাম মুভি। মুভিতে একটা দৃশ্য দেখে বহু বছর পরে বুক কেঁপে উঠেছিলো। অত্যন্ত চমৎকার একটা মুভি। সিরিয়াল কিলার রিলেটেড থ্রিলার মুভি দেখতে দেখতে বিরক্ত ধরে গেলে চট করে এই হাসপাতাল পরিবেশে বানানো থ্রিলার মুভিটি দেখে ফেলুন। থ্রিলার মুভির নানান ধরণ আছে। আমার কাছে এই ধরণের থ্রিলার বেশি ভালো লাগে। সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে এর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক। দূর্দান্ত লেগেছে। প্লট অনুযায়ী পারফেক্ট মিউজিক।   আমি প্রথমে ট্রেইলার দেখেছিলাম। ট্রেইলার অর্ধেক দেখেই আমার আগ্রহ জাগে এবং সাথে সাথে ডাউনলোড দিয়ে দেখতে বসে গেছি। আপনারা চাইলে ট্রেইলারটা দেখে আসতে পারেন। আগ্রহ জাগানোর জন্য প্লট সম্পর্কে একটু বলি। হাসপাতালে একটা বাচ্চা ভর্তি হয়েছে। বলা হচ্ছে বাচ্চাটা এক্সিডেন্ট করেছে। পুলিশ এসে ইনভেস্টিগেশন শুরু করলে দেখা যায় বাচ্চার বাবা মা থেকে শুরু করে প্রত্যেকে প্রত্যেকের জায়গা থেকে মিথ্যা কথা বলছে। কিছু একটা লুকাচ্ছে। কি লুকাচ্ছে? সেটাই রহস্য। এই রহস্যে জানতেই মুভিটা দেখতে হবে।   এই মুভির কোনো রিভিউ আমার চোখে পড়েনি। কিন্তু এই মুভি নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা করা উচি