Skip to main content

Posts

Showing posts from March, 2016

বৃত্তালাপ

এটা কোনো গল্প না। আমি প্রায় এমন হাবিজাবি চিন্তা করি। উর্বর মস্তিষ্কের কল্পনা। এর কোনো ভিত্তি নেই এবং বৃত্তালাপ বলার কারন, যখন এসব ভাবি মনে হয় আমি কোনো বৃত্তের মাঝেই আছি। সবকিছুই বৃত্ত। এমনকি পৃথিবীটাও। আমি ছাদে শুয়ে আছি। আমার আত্মা আমার শরীরে নেই। কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। আমার ঠিক পাশে তাহসান গীটার হাতে বসে আছে। লাল রঙের জামদানী পড়ে তার সাথে মিথিলাও বসে আছে। তারা গান গাইছে। আমি মুগ্ধ হয়ে তাদের গান শুনছি। যত দূরে থাকো, এত কেন কাছে শেষ স্পর্শ তোমার, আজও আছে তারা গান গাইছে। আর আমি তাকিয়ে আছি চাঁদের দিকে। চাঁদের সাথে মেঘের ধরা-ছোঁয়া খেলাটাই আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। হটাৎ আমাদের মাঝে রবি ঠাকুর উপস্থিত। তাহসান আর মিথিলা গান বন্ধ করে হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে। চাঁদের আলোয় স্পষ্ট রবি ঠাকুরকে বোঝা যাচ্ছে। রবি ঠাকুর বললেন, "সাগর, তোমাদের বাড়ির সিঁড়িঘরে আলো নেই কেন?" আমি বললাম, "চাঁদের আলোর সামনে নগণ্য বাল্বের আলো মানায় না যে!" তিনি বললেন, "আমি রবীন্দ্রনাথ বলে, আমার সামনে সস্তা সাহিত্য কপচাপে না। তোমাদের অন্ধকার সিঁড়িঘরে আমি উসঠা খেয়ে পড়ে গেছি। কালই আলোর ব্য

হঠাৎ বর্ষা, ভালোবাসার বর্ষা

নাটকের জন্য লিখেছিলাম। নাটক শুট করা হয়েছে। এখনো এডিট করা হয়নি। জুপন চন্দ্রাহত নামের একটা বাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছে। বাড়ির নামটা সুন্দর। চন্দ্র দেখে আহত। এই বাড়িতে লামিয়া থাকে। সে আজ লামিয়াকে তার ভালোবাসার কথা বলবে। কয়েকদিন আগে সে লামিয়াকে দেখেছে। প্রেম ভালোবাসা থেকে সে আজীবন দুরেই থেকেছে। কিন্তু এই মেয়ের জন্য আজ সে বেয়াহার মতো সেই মেয়ের বাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছে। এখন সকাল। একটু আগে জানালায় লামিয়ার সাথে চোখাচোখি হয়েছে। বাড়ির দারোয়ান কে বলেছে সে লামিয়ার সাথে কথা বলতে চায়, এই খবর ভিতরে চলে গেছে। বাড়ির সবাই একবার করে এসে দেখে যাচ্ছে জুপনকে। রোগা জীর্ণশীর্ণ একটা ছেলে। চুল উস্কখুস্ক। দেখেই বোঝা যায় বেকার। কিংবা ভিক্ষুক শ্রেণীর কেউ। সবাই একবার করে দেখছে আর মুখ বাকাচ্ছে। সব থেকে বেশি অবাক হয়েছে লামিয়া। সে এই ছেলেকে চেনেনা। ওই দিকে তার ভাই সুজন তাকে জেরা করেই যাচ্ছে সে চেনে কিনা। লামিয়া বারবার একটা কথাই বলছে যে সে চেনেনা। লামিয়াদের বাড়ির সামনের চায়ের দোকানে সুজন আর জুপন বসে আছে। সুজন আর জুপনের মধ্যে কথা হচ্ছে। সুজনঃ আপনি কে? জুপনঃ আমি জুপন। সুজনঃ লামিয়া কে চেনেন? জুপনঃ না চিনিন

একটি ইন্টার্ভিউ বোর্ড

কি নাম? - সিরাজুল ইসলাম। নাম তো দেখি সেকালের। - জ্বি স্যার। আমার জন্ম ১৯৮৮ সালে। টেবিলের ওপাশে বসা ভদ্রলোকটি চশমার ফাক দিয়ে ক্যান্ডিডেটের দিকে তাকালো। তারপর চোখ নামিয়ে হাতের ফাইলটা খুললো। ফাইলটা খুলতে খুলতে বললো, "প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়ে এত কম সিজিপিএ কেন?" - প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছেলে মেয়েরা তো পড়াশুনা করেনা। তাই কম নাম্বার পায় আর কি। কথা তো ভালই শিখেছ। তুমি যে ইন্টার্ভিউ বোর্ডে আছো। সেই খেয়াল আছে? - জ্বি স্যার। অবশ্যই আছে স্যার। কি করবো স্যার বলেন, জবানটাই তো আছে। কথা না বললে তো আর ভাত জুটবে না। এমবিএ টা অন্তত পাবলিক ইউনিভার্সিটি থেকে করতে পারতে। - জ্বি স্যার, ভুল হয়ে গেছে। ওরা আমার জন্য একটা সিট খালি রেখেছিলো। ইস কেন যে গেলাম না। ভদ্রলোকের চোয়াল শক্ত হয়ে গেছে। কঠিন কিছু একটা বলতে যাবেন, তখন তার একটা কল আসলো। ফোনটা হাতে নিয়েই খুশিতে নড়েচড়ে বসলেন। ওপাশ থেকে কি বলছে শোনা গেলনা। শুধু এপাশ থেকে ভদ্রলোক স্যার স্যার করে গেলেন। দীর্ঘ ২ মিনিট কথা বলার পড়ে ফোন রাখলেন এবং ক্যান্ডিডেটের দিকে বিরক্ত নিয়ে তাকালেন। কি যেন নাম বললে তোমার? - স্যার, সিরাজুল

বাবা

সেসব কন্যাদের জন্য যারা তাদের প্রিয় বাবকে হারিয়েছে। বাবার ভালোবাসা অন্য জিনিস। মাপা যায় না। বর্ননা করা যায় না। অনুভব করতে হয়। পৃথিবীতে অনেক খারাপ মানুষ আছে তবে একজন খারাপ বাবা নেই। সাফায়েত সাহেব তার মেয়েকে নিয়ে পুকুর পাড়ে বসে হো হো করে হাসছেন। তার মেয়ে পুতুল। দেখতেও পুতুলের মত। সবে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। বিরাট চঞ্চল। সারাদিন হৈ চৈ করে বেড়ায়। পুকুর ভালোবাসে। এই কিছুক্ষণ আগে পুতুলের মা আয়েশা পুতুলকে পুকুরে নামার জন্য বকা দিয়েছেন। এই নিয়ে নাকি আজ সে পাঁচবার পুকুরে নেমেছে। বাবা কিছু বলেননা। অনেক বেশি ভালোবাসেন পুতুলকে। পুতুল আনন্দ করে আর বাবা মুগ্ধ হয়ে দেখেন। মাঝে মাঝে যখন তার মা এই নিয়ে বকা ঝকা করেন তখন তিনি হো হো করে হাসেন। পেটে আগুন্তক নিয়ে পুতুলের মা খুব দুশ্চিন্তায় থাকেন মেয়েকে নিয়ে। কিন্তু কে শোণে কার কথা?  পুকুর পাড়ে বসে সাফায়েত সাহেব তার মেয়েকে বললেন, “তোকে না কতবার বারণ করেছি যখন তখন পুকুরে না নামতে, নামিস কেন?” পুতুল বলল, “বাবা, পুকুর ভালো লাগে, পুকুরের পানিতে লাফাতে আরও বেশি ভালো লাগে। আমি কি করবো?” সাফায়েত সাহেব হেসে দিয়ে বললেন, “ঠাণ্ডা বাধাবি তো।” পুত

অলস সম্পর্ক

উৎসর্গঃ আলমগীর রুমান পাগল পরিচালক। শুদ্ধতম মানুষ বলে একটা কথা আছে। সে শুদ্ধতম মানুষ কিনা জানিনা। কিন্তু শুদ্ধতম ভালোবাসা তার মাঝে আমি দেখেছি। শুদ্ধতম ভালোবাসায় সে অনেক উপরে যাবে এবং নিচে দাড়িয়ে আমি তাকে দেখবো, সেই প্রার্থনা করি। এসব কি? - সারপ্রাইজ। গিফট। ফাজলামি পাইছো? - ফাজলামি হবে কেন? তোমাকে গিফট দিতে পারি না? না পারো না। আমি তোমার কি লাগি? - দেখো, আমি তোমার কি হই না হই, সেটা জানিনা। তোমাকে গিফট দিতে ইচ্ছে হলো। দিলাম। বাকিটা তোমার ব্যাপার। বলেই সায়েম মালিহার বাসা থেকে বের হয়ে এলো। বাইরে বেশ ঠাণ্ডা পড়েছে। পাঞ্জাবিতে শীত মানাচ্ছে না। ইস যদি কুয়াশা পড়তো। লাভ তেমন কিছুই হতো না। মালিহা তো আর পাশে থাকতো না। ভুলটা তারই। ভালোবাসি বলে দূরত্ব বজায় রেখে এদিক ওদিক দৌড়ে বেড়িয়েছে। তাহলে কি আর ভালোবাসা হবে? এই দীর্ঘ সময়ে তার সাথে তিন চার বারের বেশি হাতে হাত রেখে হাঁটা হয়েছে বলে মনে হয়না। কেন মেয়েটা তারে ভালবাসবে? ভালোবাসা পাওয়ার মত তো সে কিছুই করেনি। তবুও তো অনেক দিয়েছে। সায়েম তার ভুল বুঝতে পেরেছে। সে আর একটাবার সুযোগ চায়। তাকে ভালোবাসার। দেখিয়ে দিতে চায়, সে আসলে কত

অভিমান

এক কাঁপ কফি বানাও না। - খামাখা এখন কফি বানাবো কি জন্য? একটু আগে না চা খেলে। খেতে ইচ্ছে করছে, খাবো না? - আচ্ছা, থাকো। আনতেছি। ওই, শোনো। - আবার কি? তোমার ওই নীল শাড়িটা আছে না? একটু পড়বা? দেখবো তোমায়। - আচ্ছা, এত ঢং আসে কই থেকে তোমার? হ্যাঁ? মেজাজ খারাপ লাগে তোমার ঢং দেখলে। নীলা গটগট করে হেঁটে বের হয়ে গেলো রুম থেকে। খেপে যাবার বদলে খুশি হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু খুশি হবার কোনো কারন নেই। মানুষটা পাগল। যখন রোমান্স করতে ইচ্ছে করে, তখন সে থাকেনা। উদ্ভট উদ্ভট সময়ে তার মনে রোমান্স উতলে উতলে পড়ে। তখন প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ হয়। সব ভেঙ্গে ফেলতে ইচ্ছে করে। পারলে পাগলটাকেও ধরে আছাড় মারতে ইচ্ছে করে। মানুষটা জানি কেমন কেমন। মনের মধ্যে এক গাদা প্রেম নিয়ে কাছে যাওয়ার পরে বলে, "চলো, ঘুম পাইছে। ঘুমাই।" নীলা দাঁতে দাঁত চেপে রেখে পানি গরম করছে। মাথা ঠাণ্ডা রাখার চেষ্টা। কিন্তু সফল হচ্ছে না। হাত পা কাঁপছে রাগে। কফি নিয়ে যাওয়ার পরে, কি না কি বলবে কিংবা করবে তখন আরও মেজাজ খারাপ হবে। গটগট করতে করতে আবার সে রুমে ঢুকল। রুম অন্ধকার। গেলো বারান্দায়। বারান্দায় গিয়েই নীলা হতভম্ব হয়ে গেলো