Skip to main content

অভিমান

এক কাঁপ কফি বানাও না।
- খামাখা এখন কফি বানাবো কি জন্য? একটু আগে না চা খেলে।
খেতে ইচ্ছে করছে, খাবো না?
- আচ্ছা, থাকো। আনতেছি।
ওই, শোনো।
- আবার কি?
তোমার ওই নীল শাড়িটা আছে না? একটু পড়বা? দেখবো তোমায়।
- আচ্ছা, এত ঢং আসে কই থেকে তোমার? হ্যাঁ? মেজাজ খারাপ লাগে তোমার ঢং দেখলে।

নীলা গটগট করে হেঁটে বের হয়ে গেলো রুম থেকে। খেপে যাবার বদলে খুশি হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু খুশি হবার কোনো কারন নেই। মানুষটা পাগল। যখন রোমান্স করতে ইচ্ছে করে, তখন সে থাকেনা। উদ্ভট উদ্ভট সময়ে তার মনে রোমান্স উতলে উতলে পড়ে। তখন প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ হয়। সব ভেঙ্গে ফেলতে ইচ্ছে করে। পারলে পাগলটাকেও ধরে আছাড় মারতে ইচ্ছে করে। মানুষটা জানি কেমন কেমন। মনের মধ্যে এক গাদা প্রেম নিয়ে কাছে যাওয়ার পরে বলে, "চলো, ঘুম পাইছে। ঘুমাই।"

নীলা দাঁতে দাঁত চেপে রেখে পানি গরম করছে। মাথা ঠাণ্ডা রাখার চেষ্টা। কিন্তু সফল হচ্ছে না। হাত পা কাঁপছে রাগে। কফি নিয়ে যাওয়ার পরে, কি না কি বলবে কিংবা করবে তখন আরও মেজাজ খারাপ হবে।
গটগট করতে করতে আবার সে রুমে ঢুকল। রুম অন্ধকার। গেলো বারান্দায়। বারান্দায় গিয়েই নীলা হতভম্ব হয়ে গেলো। এক হাতে এক গাদা গোলাপ ফুল, আরেক হাতে একটা গিফট বক্স নিয়ে জায়েদ দাড়িয়ে আছে হলুদ পাঞ্জাবী পড়ে। বারান্দার হালকা নীল আলোয় জায়েদকে অদ্ভুত লাগছে। জায়েদ হাসছে। সেই চিরচেনা পাগলামি হাসি। নীলার এখন রাগ করে থাকার প্রশ্নই ওঠে না।

"কফির মগটা রাখো", জায়েদ বলল। নীলা কফির মগটা রেখে অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে রইলো জায়েদের দিকে। জায়েদ নীলাকে জড়িয়ে ধরলো। বলল, "নীলা, আমি তোমাকে ভালোবাসি। অনেক। বিশ্বাস করো। আর তোমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য দুঃখিত।"
আমাকে এক মিনিট সময় দাও।
- কেন?
শাড়িটা পড়ে আসি।
- দরকার নেই।
আচ্ছা, আমাকে ছাড়ো তাহলে।
- না। রাগ করলেও ছাড়বো না। সারারাত এভাবে জড়িয়ে ধরে থাকবো।
সারারাত?
- হ্যাঁ।
পাগল।
- ভালোবাসি তোমায়।
আমিও।

Comments

Popular posts from this blog

রহস্যময় ভালবাসা

ভুমিকা ভুমিকা সাধারনত উপন্যাসের হয় কিংবা রচনা জাতীয় কোনো লেখায় হয়। একটা গল্পের জন্য ভুমিকা লেখা হাস্যকর। তবুও লিখলাম। এই গল্পের সাথে বাস্তবের কোনো মিল নেই। এটা শুধুই কল্পনা দিয়ে লেখা। তবে নাম গুলোর অস্থিত্ত্ব আছে। ভুতের গল্প লিখতে চেয়েছিলাম। যে গল্প মাথায় ছিল সেটা তেমন ভয়ঙ্কর বলে আমার মনে হলো না। কিংবা আমি হয়ত ভয়ঙ্কর কিছু লিখতে পারতাম না। তাই লিখলাম না। আশা করি এই গল্পটা পড়ে খুব বেশি বিরক্ত হবেন না। যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে ধন্যবাদ। ভালো না লাগলেও ধন্যবাদ।  ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরী টুটপাড়া ঘোষের ভিটা, খুলনা ২০.০৯.২০১২  উৎসর্গ  একটা মানুষকে কি দুইবার উৎসর্গ করা যায়? এইটা সেই মানুষটার জন্য, যার কাছেই শুধুমাত্র আমি একজন লেখক। যার কাছে আমার ভালো কাজেরও মূল্য আছে, খারাপ কাজেরও মূল্য আছে। আমার অদ্ভুত আচরণে সে বিরক্ত হয়, আসলে সে মুগ্ধ হয় বলে আমার বিশ্বাস।  মানুষটা আমাকে অনেক ভালোবাসে, এত কেন ভালোবাসে, কিভাবে ভালোবাসে, আমি কিছুই জানিনা। আমার প্রিয় হলুদিয়া পাখি একটা মেয়ে কতটা সুন্দর হলে একটা ছেলে মেয়েটার দিকে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে? একটা মেয়ে ঠিক কতটা সুন্দর হলে

Veer Zaara

  Spoiler Alert শুরুতেই ইয়াশ চোপড়ার ম্যাজিকাল কণ্ঠে কবিতা। কবিতা শেষ হওয়া মুহুর্তেই সনু নিগম আর লতা গেয়ে ওঠে আমার প্রিয় সব থেকে ম্যাজিকাল গানটা, “কিউ হাওয়া আজ ইউ গা রা হি হে”। সনুর কণ্ঠের সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে স্ক্রিনে চলে আসে আমার প্রিয় সুপারস্টার শাহরুখ খান। সাদা জামা পড়ে সাদা নৌকায় ভেসে প্রকৃতির সাথে মিশে যাওয়ার দৃশ্য আমাকে আজও অনুপ্রেরণা দেয় প্রকৃতির সাথে এভাবে একাত্বতা ঘোষনা করার। মুভির শুরুতেই এই গান মনের মধ্যে একটা প্রশান্তি দেয়। মুভি দেখার আগ্রহ কয়েকগুন বাড়িয়ে দেয়।   এই গান শেষ হওয়া মুহুর্তেই দেখা যায়, বৃদ্ধ বীর প্রতাপ সিং স্বপ্নে জারা হায়াত খানকে গুলি খেতে দেখে ধরফর করে ঘুম ভেঙ্গে উঠে বসে। শাহরুখ খানের এই বৃদ্ধ চরিত্র তার ক্যারিয়ারে উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে থাকবে আজীবন। ২২ বছর ধরে বীর প্রতাপ সিং নিজেকে জেলে বন্দী করে রেখেছে। এই ২২ বছরে কারো সাথে একটা কথা পর্যন্ত বলেনি। শুধুমাত্র জারার সন্মান রক্ষার্থে। কেউ তার গল্প জানেনা। হঠাৎ একদিন সামিয়া সিদ্দিকি নামের একজন হিউমান রাইটস লয়ার এগিয়ে এলো এই বীর প্রতাপ সিং এর গল্প জানার জন্য। ২২ বছর ধরে যেই মানুষটাকে সবাই কয়েদী নম্বর ৭৮৬ ব

Anveshanam (2020)

No Spoiler মুভির নাম Anveshanam , এটি একটি মালায়ালাম মুভি। মুভিতে একটা দৃশ্য দেখে বহু বছর পরে বুক কেঁপে উঠেছিলো। অত্যন্ত চমৎকার একটা মুভি। সিরিয়াল কিলার রিলেটেড থ্রিলার মুভি দেখতে দেখতে বিরক্ত ধরে গেলে চট করে এই হাসপাতাল পরিবেশে বানানো থ্রিলার মুভিটি দেখে ফেলুন। থ্রিলার মুভির নানান ধরণ আছে। আমার কাছে এই ধরণের থ্রিলার বেশি ভালো লাগে। সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে এর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক। দূর্দান্ত লেগেছে। প্লট অনুযায়ী পারফেক্ট মিউজিক।   আমি প্রথমে ট্রেইলার দেখেছিলাম। ট্রেইলার অর্ধেক দেখেই আমার আগ্রহ জাগে এবং সাথে সাথে ডাউনলোড দিয়ে দেখতে বসে গেছি। আপনারা চাইলে ট্রেইলারটা দেখে আসতে পারেন। আগ্রহ জাগানোর জন্য প্লট সম্পর্কে একটু বলি। হাসপাতালে একটা বাচ্চা ভর্তি হয়েছে। বলা হচ্ছে বাচ্চাটা এক্সিডেন্ট করেছে। পুলিশ এসে ইনভেস্টিগেশন শুরু করলে দেখা যায় বাচ্চার বাবা মা থেকে শুরু করে প্রত্যেকে প্রত্যেকের জায়গা থেকে মিথ্যা কথা বলছে। কিছু একটা লুকাচ্ছে। কি লুকাচ্ছে? সেটাই রহস্য। এই রহস্যে জানতেই মুভিটা দেখতে হবে।   এই মুভির কোনো রিভিউ আমার চোখে পড়েনি। কিন্তু এই মুভি নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা করা উচি