Skip to main content

Posts

Showing posts from January, 2016

ফাঁসি

কাশেমকে মঞ্চে উঠানো হয়েছে। এই মঞ্চ যেন তেন মঞ্চ না। ফাঁসির মঞ্চ। কাশেম যখন মঞ্চে প্রথম পা রাখলো তখন তার শরীর শিরশির করে উঠলো। মনে হলো তার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেছে। তার হাত বাঁধা। তবে চোখ বাঁধা না। মঞ্চের নিচে একদিকে কাশেমের বাবা মা আর তার ছোট বোন দাড়িয়ে আছে। আর আরেকদিকে দাড়িয়ে আছে সুলতানার বাবা মা আর ভাই। যাকে কাশেম কিছুদিন আগে ধর্ষণ করেছে। এবং তারপরপরই সুলতানা আত্মহত্যা করেছে। মঞ্চের সামনে শুধু এই দুই পরিবারই না। আরও অসংখ্য মানুষ দাড়িয়ে আছে, কাশেমের ফাঁসি দেখার জন্য। দাড়িয়ে আছে দেশের বিখ্যাত সব পত্রিকার আর টিভি চ্যানেলের অসংখ্য সাংবাদিক আর ক্যামেরাম্যান। এই ফাঁসির দৃশ্য প্রতিটা চ্যানেলে সরাসরি দেখানো হচ্ছে। ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের টিভি দেখতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে কিছু ছেলে মেয়ে উকি মেরে দেখছে, কেন কি হচ্ছে টিভিতে। দেখার দরকার আছে, এদেরও জানা উচিত, ধর্ষণ কতটা নির্মম এবং গর্হিত কাজ। কাশেমের সামনে ফাঁসির দড়ি। আর আট মিনিটের মাথায় তার ফাঁসি হবে। তার অনেকে পিপাসা হচ্ছে। কিন্তু পানি তার জন্য নিষিদ্ধ। এই মুহূর্তে তার জন্য সব কিছুই নিষিদ্ধ। কাশেমের বাবা মা হাউমাউ করে কাঁদছে

হঠাৎ রাতে

উৎসর্গঃ  সাদমান নাজিম তোর সাথে এই গল্পের কোনো সম্পর্ক নেই। লিখছিলাম, হঠাৎ পাশে তাকিয়ে দেখি আজ তোর জন্মদিন। লিখতে লিখতে তোরে মিস করছিলাম। তুই এমন একজন মানুষ যাকে ভালো লাগে কিন্তু তাকে নিয়ে কিছু লেখা যায় না। ভালো থাকিস। শুভ জন্মদিন। কিছু পুলিশ রিক্সা থামাল। "ওই খাড়া। কই যাস, খাড়া।" আমি ততক্ষণে কাঁপছি। ভয়ে না, শীতে। রাত প্রায় দুইটা। জায়গাটা বেশ ফাঁকা। সামনে মিরপুর। রিক্সা থামল। ওরা ছিল ৫ জন। একজন কাছে এসে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, "কি? এত রাতে কি? কই যাস?" আমি বললাম, "স্যার, বাসায় যাই।" স্যার বললেন, "নাম তুই। তোর বাসা কই?" আমি নামতে নামতে বললাম, "স্যার, শ্যামলী।" এত রাতে বাইরে কি করিস? স্যার, গার্লফ্রেন্ডের বাড়ির সামনে গেছিলাম। সরি বলতে। মনে হয় সম্পর্কটা টিকবে না। ফাজলামি করস? খাইসত কিছু? না স্যার, খুব ক্ষুধা লাগছে। এক প্লেট গরম ভাত হলে চলত। হঠাৎ চোখে মুখে আন্ধার দেখলাম এবং আমার মুখ যে কোনো কারনেই হোক এখন রিক্সাওয়ালার দিকে। কারনটা সাধারন। চড় খেয়েছি। গরম ভাতে বদলে চড়। ওদের মধ্যে থেকে একজন রিক্সাওয়ালাকে চলে যেতে বলল

ভুল

নাবিলা স্থির হয়ে তাকিয়ে আছে চাঁদের দিকে। সে বসে আছে ছাদের দেয়ালে হেলান দিয়ে। নীল রঙের শাড়িতে তাকে দেখাচ্ছে ইন্দ্রাণীর মতো। অসম্ভব মায়াকড়া দৃষ্টিতে সে তাকিয়ে আছে চাঁদের দিকে। চাঁদের সমস্ত আলো এসে পড়েছে তার মুখে। যেন এই আলো হাজার বছর ধরে অপেক্ষা করেছিল তাকে আলোকিত করার জন্য। কাছেই বসে আছে জামিল হোসেন। তার হাতে সিগারেট। মাত্র ধরিয়েছে। সে সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে অবাক হয়ে নাবিলার দিকে তাকিয়ে আছে। তার অবাক হবার প্রধান কারন হচ্ছে, একটা মৃত মানুষকে শুধু চাঁদের আলোতে এতোটা জীবন্ত, এতোটা প্রানবন্ত কিংবা এতোটা মায়াকড়া লাগতে পারে, তিনি ভাবতেই পারেননি। তিনি সামান্য কাঁপছেন। ঠিক মতো সিগারেট খেতে পারছেননা। আকাশটা আজ বেশ পরিষ্কার। ঠাণ্ডা বাতাসে তার চুল গুলো উড়ছে। মাঝে মাঝে তিনি হতাশ ভঙ্গিতে সিগারেটের ধোঁয়া উড়াচ্ছেন। তাকে দেখে মনেই হচ্ছে না যে সে কিছুক্ষণ আগে তার স্ত্রীকে বিষ খাওয়ায় হত্যা করেছেন। পরিকল্পিত হত্যা না। ঝোঁকের বশে হত্যা করেছেন। এখন বেশ অবাক হচ্ছেন। মাথার মধ্যে বারবার একটা কথা ঘুরপাক খাচ্ছে, “এ আমি কি করলাম? কি করলাম?” জামিল হোসেনের বাবা তাকে ছোটোবেলায় বলেছিলেন, “বাবা, রা

পুতুল

আমি মোটামুটি নিশ্চিত আমার সাথে কেউ হাঁটছে এবং মানুষটা যখন থেকে আমার সাথে হাঁটছে তখন থেকেই আমি অন্য রাস্তায় হাঁটছি। তবে মানুষটা যে মানুষ না সে ব্যাপারেও আমি মোটামুটি নিশ্চিত। অন্য রাস্তায় হাঁটছি সেটা বুঝতে পারছি কারন আমি রাস্তা চিনতে পারছি না। আমার পা কাঁপছে। রাত এতক্ষণে প্রায় দুইটা বাজার কথা। শীত পুরোপুরি পড়েনি। হালকা ঠাণ্ডা বাতাসে শরীর জমে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে পাঞ্জাবি ভিজে গেছে। আমি কোনদিকে হাঁটছি কেনই বা হাঁটছি বুঝতে পারছি না। ইচ্ছা করছে সাথের মানুষটাকে জিজ্ঞাসা করি, “ভাই? আমরা কোথায় যাচ্ছি? আপনার কাছে সিগারেট হবে? খুব ভয় করছে। সিগারেট টানলে ভয় কিছুটা কমার কথা।” জিজ্ঞাসা করা সম্ভব না। কারন এখন মনে হচ্ছে, পা বাদে সমস্ত শরীর জমে গেছে। শীতে কিংবা ভয়ে। আট বছর পরে গ্রামে এসেছি। সেটা সমস্যা না। সমস্যা হচ্ছে এত রাতে বের হওয়া উচিত হয়নি। বিশ্বাস করা উচিত ছিল যে গ্রামে গঞ্জে এখনো ভুত আছে। ভুত? আচ্ছা মানুষটা কি আসলে ভুত? নাকি অশরীরী প্রেতাত্মা? নাকি অন্য কিছু? পরিবেশটা ঘোর লাগানো। আশেপাশে গাছপালা। কোথাও মাঠ। কোথাও পুকুর। মাঝে ভাঙ্গা রাস্তা। এমন ঘোর লাগা পরিবেশে বাতাসের শো শো শব্দে

অল্প সময়, অল্প প্রেম

বিয়ে বাড়ি মানেই খাওয়াদাওয়া, লাইটিং, সাজগোজ এইসব। কারো কাছে বিদায়ের অনুষ্ঠান। কারো কাছে কাউকে পাওয়ার অনুষ্ঠান। কেউ আসে বোরহানি খেতে, কেউ রোস্ট। কিন্তু আমার কাছে বিয়েবাড়ি মানে প্রেমে পড়া। তখন আমি বিয়েবাড়ি যেতাম কারো না কারো প্রেমে পড়তে। এমন করে কত প্রেমে পড়েছি তা প্রায় অজানা। একবারের গল্প বলি। গেলাম পরিচিত কারো বিয়ে খেতে (মনে নেই, কে ছিল)। প্রচুর সাজগোজ, প্রচুর লাইটিং। আমি রিক্সা থেকে নেমেই এদিক ওদিক করছি। বুঝতেই পারছেন কেন। বাড়ির ভিতরে পা রাখলাম। সাথে সাথেই আমার ভিতরে কি যেন একটা কাজ শুরু করলো, বলে বোঝানো যাবেনা। মনটা আরও বেশি চঞ্চল হয়ে গেলো। চলে গেলাম বউকে যেখানে রাখা হয়েছে সেখানে। গিয়েই হতভম্ব হয়ে গেলাম। মুগ্ধ হয়ে গেলাম। যে কারনে এসেছিলাম, সেটাই হলো। প্রেমে পড়ে গেলাম। ভাবছেন বউয়ের প্রেমে পড়ে গেছি। নাহ, বউয়ের পাশে বসে থাকা বউয়ের ছোট বোনের প্রেমে পড়েছি। মনে মনে হাসলাম, খুবই কমন একটা ব্যাপার। বউয়ের ছোটবোনকে ভাল লাগবে এটাই স্বাভাবিক। আমার মতই বয়স। এই ১৪ কিংবা ১৫ হবে। খুব লক্ষ্য করে দেখছিলাম তার কানের দুলটা তার হাসির সাথেই কিভাবে দুলছিল। সেকেন্ড যায় আর আমি মুগ্ধ হই। সে