Skip to main content

Into the Wild (2007)

 

NO SPOILER

এই সিনেমাটা তাদের জন্য, যারা ভাবেন, এইসব নিয়ম-কানুন, যান্ত্রিকতা, ব্যাখ্যাহীন সম্পর্ক ছেড়ে দূরে কোথাও যেতে পারতাম! একেবারে প্রকৃতির খুব কাছে। একেবারে স্বাধীন। কোনো টাকা নেই, কোনো সম্পর্ক নেই, কোনো স্মার্ট ডিভাইস নেই। শুধু আমি আর প্রকৃতি। হ্যাঁ, এমনটা মাঝে মাঝে কিংবা সব সময় যারা ভাবেন তাদের জন্য এই সিনেমা মাস্ট ওয়াচ।
সিনেমাটি একটি সত্য ঘটনার উপর নির্মান করা। ক্রিস্টোফার জনসন মেকিন্ডলেস ১৯৯০ সালে পড়াশুনা শেষ করে সিদ্ধান্ত নেন তিনি প্রকৃতির সন্ধানে যাবেন। হেটে বেড়াবেন, খুঁজে বেড়াবেন নিজের স্বত্বাকে, নিজের অস্তিত্বকে। তখন তার বয়স ছিলো ২২ বছর। তার নিজের সেভিংস ছিলো ২৪,০০০ ডলার যেটা তিনি দান করে দেন কোনো এক চ্যারিটি ফাউন্ডেশনে। তারপর তিনি তার গাড়ী নিয়ে নেমে যান রাস্তায়। যাত্রার শুরুতেই গাড়ী নষ্ট হয়ে যায়। গাড়ী ফেলে রেখে তিনি ব্যাগ নিয়ে পায়ে হাঁটা শুরু করেন। উদ্দেশ্য ছিলো আলাস্কা যাবেন। এভাবেই গল্প এগিয়ে যায়।
 
প্রকৃতির সাথে একা যুদ্ধ করা খুব একটা সহজ কথা না। সেটা তিনি বুঝতে পারেন একটু দেরিতেই। শুরুতে সময় আনন্দে কাটলেও একসময় বুঝতে পারেন সমাজ কি জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। সমাজে মানুষ কেন একসাথে বসবাস করে। বুঝতে পারেন কষ্ট একা একা ভোগ করা গেলেও আনন্দ উপভোগ করার জন্য আসলেই পাশে একজন মানুষ থাকতে হয়। সেকারনেই মৃত্যুর ঠিক আগে একটা কথা লিখে রেখে যান, “আনন্দ তখনি সত্য হয় যখন সেটা ভাগ করে নেওয়া যায়।”
সিনেমার ডিরেকশন অসাধারণ ছিলো। স্ক্রিনে আটকে থাকার মতো। ক্রিস্টোফারের চরিত্রে অভিনয় করেন এমিল হির্চস। মুগ্ধ হবার মতো অভিনয় ছিলো। কিছু চ্যালেঞ্জিং অভিনয় ছিলো যেটা সে বেশ সুন্দর করেই ফুটিয়ে তুলেছে, মানতেই হবে। প্রতিটা চরিত্রই আসলে বেশ ভালোভাবে ফুটে উঠেছে। নেগেটিভ কোনো কিছুই চাইলেও বলা সম্ভব হচ্ছে না।
 
নিজের অনুভূতি বলতে গেলে, বেশি খারাপ লেগেছে, যখন মানুষটা জীবনের শেষ মুহুর্তে এসে মানুষের ভিড়ে যাওয়ার জন্য যন্ত্রনায় ছটফট করেন। শেষ দৃশ্যে নিজেকে সেখানে কল্পনা করে শিউরে উঠছিলাম। আহারে মানুষটা প্রকৃতির খুব কাছে আসতে গিয়ে কি ভুলটাই না করলো!
 
যারা দেখেননি, তাদের বলি, আপনি যদি অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন, তাহলে এই সিনেমা আপনার জন্য মাস্ট ওয়াচ।

Movie: Into the Wild (2007)
Director: Sean Penn
Stars: Emile Hirsch, Vince Vaughn, Catherine Keener

Comments

Popular posts from this blog

রহস্যময় ভালবাসা

ভুমিকা ভুমিকা সাধারনত উপন্যাসের হয় কিংবা রচনা জাতীয় কোনো লেখায় হয়। একটা গল্পের জন্য ভুমিকা লেখা হাস্যকর। তবুও লিখলাম। এই গল্পের সাথে বাস্তবের কোনো মিল নেই। এটা শুধুই কল্পনা দিয়ে লেখা। তবে নাম গুলোর অস্থিত্ত্ব আছে। ভুতের গল্প লিখতে চেয়েছিলাম। যে গল্প মাথায় ছিল সেটা তেমন ভয়ঙ্কর বলে আমার মনে হলো না। কিংবা আমি হয়ত ভয়ঙ্কর কিছু লিখতে পারতাম না। তাই লিখলাম না। আশা করি এই গল্পটা পড়ে খুব বেশি বিরক্ত হবেন না। যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে ধন্যবাদ। ভালো না লাগলেও ধন্যবাদ।  ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরী টুটপাড়া ঘোষের ভিটা, খুলনা ২০.০৯.২০১২  উৎসর্গ  একটা মানুষকে কি দুইবার উৎসর্গ করা যায়? এইটা সেই মানুষটার জন্য, যার কাছেই শুধুমাত্র আমি একজন লেখক। যার কাছে আমার ভালো কাজেরও মূল্য আছে, খারাপ কাজেরও মূল্য আছে। আমার অদ্ভুত আচরণে সে বিরক্ত হয়, আসলে সে মুগ্ধ হয় বলে আমার বিশ্বাস।  মানুষটা আমাকে অনেক ভালোবাসে, এত কেন ভালোবাসে, কিভাবে ভালোবাসে, আমি কিছুই জানিনা। আমার প্রিয় হলুদিয়া পাখি একটা মেয়ে কতটা সুন্দর হলে একটা ছেলে মেয়েটার দিকে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে? একটা মেয়ে ঠিক কতটা সুন্দর হলে

Veer Zaara

  Spoiler Alert শুরুতেই ইয়াশ চোপড়ার ম্যাজিকাল কণ্ঠে কবিতা। কবিতা শেষ হওয়া মুহুর্তেই সনু নিগম আর লতা গেয়ে ওঠে আমার প্রিয় সব থেকে ম্যাজিকাল গানটা, “কিউ হাওয়া আজ ইউ গা রা হি হে”। সনুর কণ্ঠের সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে স্ক্রিনে চলে আসে আমার প্রিয় সুপারস্টার শাহরুখ খান। সাদা জামা পড়ে সাদা নৌকায় ভেসে প্রকৃতির সাথে মিশে যাওয়ার দৃশ্য আমাকে আজও অনুপ্রেরণা দেয় প্রকৃতির সাথে এভাবে একাত্বতা ঘোষনা করার। মুভির শুরুতেই এই গান মনের মধ্যে একটা প্রশান্তি দেয়। মুভি দেখার আগ্রহ কয়েকগুন বাড়িয়ে দেয়।   এই গান শেষ হওয়া মুহুর্তেই দেখা যায়, বৃদ্ধ বীর প্রতাপ সিং স্বপ্নে জারা হায়াত খানকে গুলি খেতে দেখে ধরফর করে ঘুম ভেঙ্গে উঠে বসে। শাহরুখ খানের এই বৃদ্ধ চরিত্র তার ক্যারিয়ারে উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে থাকবে আজীবন। ২২ বছর ধরে বীর প্রতাপ সিং নিজেকে জেলে বন্দী করে রেখেছে। এই ২২ বছরে কারো সাথে একটা কথা পর্যন্ত বলেনি। শুধুমাত্র জারার সন্মান রক্ষার্থে। কেউ তার গল্প জানেনা। হঠাৎ একদিন সামিয়া সিদ্দিকি নামের একজন হিউমান রাইটস লয়ার এগিয়ে এলো এই বীর প্রতাপ সিং এর গল্প জানার জন্য। ২২ বছর ধরে যেই মানুষটাকে সবাই কয়েদী নম্বর ৭৮৬ ব

Anveshanam (2020)

No Spoiler মুভির নাম Anveshanam , এটি একটি মালায়ালাম মুভি। মুভিতে একটা দৃশ্য দেখে বহু বছর পরে বুক কেঁপে উঠেছিলো। অত্যন্ত চমৎকার একটা মুভি। সিরিয়াল কিলার রিলেটেড থ্রিলার মুভি দেখতে দেখতে বিরক্ত ধরে গেলে চট করে এই হাসপাতাল পরিবেশে বানানো থ্রিলার মুভিটি দেখে ফেলুন। থ্রিলার মুভির নানান ধরণ আছে। আমার কাছে এই ধরণের থ্রিলার বেশি ভালো লাগে। সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে এর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক। দূর্দান্ত লেগেছে। প্লট অনুযায়ী পারফেক্ট মিউজিক।   আমি প্রথমে ট্রেইলার দেখেছিলাম। ট্রেইলার অর্ধেক দেখেই আমার আগ্রহ জাগে এবং সাথে সাথে ডাউনলোড দিয়ে দেখতে বসে গেছি। আপনারা চাইলে ট্রেইলারটা দেখে আসতে পারেন। আগ্রহ জাগানোর জন্য প্লট সম্পর্কে একটু বলি। হাসপাতালে একটা বাচ্চা ভর্তি হয়েছে। বলা হচ্ছে বাচ্চাটা এক্সিডেন্ট করেছে। পুলিশ এসে ইনভেস্টিগেশন শুরু করলে দেখা যায় বাচ্চার বাবা মা থেকে শুরু করে প্রত্যেকে প্রত্যেকের জায়গা থেকে মিথ্যা কথা বলছে। কিছু একটা লুকাচ্ছে। কি লুকাচ্ছে? সেটাই রহস্য। এই রহস্যে জানতেই মুভিটা দেখতে হবে।   এই মুভির কোনো রিভিউ আমার চোখে পড়েনি। কিন্তু এই মুভি নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা করা উচি