বিশ্বাস করে হাতটা বাড়াও
আহনাফ
একটা বট গাছের নিচে বসে আছে। সময় সন্ধ্যা। চারিদিকে কুয়াশায় ছেয়ে গেছে।
কালো একটা চাদর গায়ে দিয়ে সে বসে আছে, বট গাছের গুড়িতে। এই বট গাছের বয়স কত
হতে পারে, তা তার জানা নেই। তবে দেড়শ বছর হবার সম্ভবনা তো আছেই। আহনাফের
সাথে বসে আছে আহনাফের এক ভাই। বয়সে ছোট। নাম সুজন। সে এই প্রথম এখানে এলো।
আসার পর থেকেই সে মুগ্ধ। পৃথিবীতে যে এত সুন্দর একটা জায়গা থাকতে পারে, এত
সুন্দর একটা দৃশ্য হতে পারে, সেটা তার ধরনার বাইরে ছিল। সুজন বলল, "আচ্ছা
ভাইয়া, তুমি কি এখানে রোজ আসো?" আহনাফ বলল, "গত চার বছর ধরে প্রতিদিন আসি।"
- বলো কি? কেন? এই জায়গা তোমার এত ভালো লাগে?
-- হ্যাঁ, ভালো তো লাগেই। কিন্তু তুই কি একটা বিষয় লক্ষ্য করে দেখেছিস?
- কি?
-- বট গাছটা অসুস্থ।
- তো?
-- তো, আমি এখানে এসে প্রতিদিন প্রার্থনা করি যেন বট গাছটা সুস্থ হয়ে যায়।
- তাই বলে গোটা চার বছর ধরে?
- হ্যাঁ। এই বট গাছটা একটা মানুষের খুব প্রিয় ছিল। মানুষটা একদিন অসুস্থ হয়ে পড়ে, তারপর থেকে এই গাছটাও অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর তার পর থেকে আমি প্রার্থনা করি যেন বটগাছটা সুস্থ হয়। হয়ত এই গাছটা সুস্থ হলে মানুষটাও সুস্থ হয়ে যাবে।
-- বলো কি? মানুষটা কে? কি হয়েছে তার?
আহনাফ উত্তর করে না। সে অন্ধকার আর কুয়াশার লীলাখেলা দেখে। দেখে মনে হয়, এক গুচ্ছ মেঘ উড়ছে তার সামনে। হাত বাড়ালেই সে মেঘের সাথে মাখামাখি হবে। কাছে কোথাও শিয়াল ডেকে ওঠে চাপা স্বরে। হঠাৎ তার কানে কানে কে যেন ফিসফিস করে বলে, "আর কত অভিমান করে রবে? সেই যে গেলে। আর তো এলে না, আমায় দেখতে। এবার হাতটা বাড়াও। শেষ একটাবার তোমার হাতটা ধরি।" আহনাফের চোখ ভিজে যায় জলে। কেউ দেখে না। কেউ জানেনা। শুধু বটগাছটা টের পায়। সে আহনাফকে তার সমস্ত ডালপালা দিয়ে আঁকরে রাখতে চায়।
অহনা তাকিয়ে আছে জানালার বাইরে। এই ক্লিনিকের জানালার বাইরের দৃশ্যটা অনেক সুন্দর। সে মুগ্ধ হয়ে কুয়াশা দেখছে। যেন অনেকদিন কুয়াশা দেখেনা। তার শরীরটা অনেক দুর্বল। আজ কেন জানি খানিকটা সুস্থ লাগছে। এই সুস্থতাই শেষ সুস্থতা কিনা কে জানে। অনেকটা আগুন নিভে যাওয়ার আগে জ্বলে ওঠার মতো। বাতাসের সো সো শব্দ শোনা যাচ্ছে। কে যেন ফিসফিস করে বলছে, "বিশ্বাস করে হাতটা ধরে দেখো। একটিবার। শুধু একটিবার বিশ্বাস করো।" চাদরের ভিতর থেকে সে হাতটা বের করতে গিয়ে ভ্রু কুচকে ভাবল, "তার কি কোনো আফসোস আছে জীবনে? যে আফসোসের জন্য সে হাত বাড়ানোর সাহস পাচ্ছে না?"
বিঃদ্রঃ লেখাটা একজনকে উৎসর্গ করলাম। কেউ একজন আমাকে বলল, তার (লেখাটা যাকে উৎসর্গ করেছি) কষ্টটা অনুভব করতে। কারো কষ্ট কি আদৌ অনুভব করা যায়? যদি যায়, তাহলে একটা লিস্ট করতে হবে। অনেক মানুষের কষ্ট অনুভব করতে হবে। সময় অনেক অল্প। কষ্ট অনুভব না করলে সুখের মর্ম বুঝবো কি করে?
- বলো কি? কেন? এই জায়গা তোমার এত ভালো লাগে?
-- হ্যাঁ, ভালো তো লাগেই। কিন্তু তুই কি একটা বিষয় লক্ষ্য করে দেখেছিস?
- কি?
-- বট গাছটা অসুস্থ।
- তো?
-- তো, আমি এখানে এসে প্রতিদিন প্রার্থনা করি যেন বট গাছটা সুস্থ হয়ে যায়।
- তাই বলে গোটা চার বছর ধরে?
- হ্যাঁ। এই বট গাছটা একটা মানুষের খুব প্রিয় ছিল। মানুষটা একদিন অসুস্থ হয়ে পড়ে, তারপর থেকে এই গাছটাও অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর তার পর থেকে আমি প্রার্থনা করি যেন বটগাছটা সুস্থ হয়। হয়ত এই গাছটা সুস্থ হলে মানুষটাও সুস্থ হয়ে যাবে।
-- বলো কি? মানুষটা কে? কি হয়েছে তার?
আহনাফ উত্তর করে না। সে অন্ধকার আর কুয়াশার লীলাখেলা দেখে। দেখে মনে হয়, এক গুচ্ছ মেঘ উড়ছে তার সামনে। হাত বাড়ালেই সে মেঘের সাথে মাখামাখি হবে। কাছে কোথাও শিয়াল ডেকে ওঠে চাপা স্বরে। হঠাৎ তার কানে কানে কে যেন ফিসফিস করে বলে, "আর কত অভিমান করে রবে? সেই যে গেলে। আর তো এলে না, আমায় দেখতে। এবার হাতটা বাড়াও। শেষ একটাবার তোমার হাতটা ধরি।" আহনাফের চোখ ভিজে যায় জলে। কেউ দেখে না। কেউ জানেনা। শুধু বটগাছটা টের পায়। সে আহনাফকে তার সমস্ত ডালপালা দিয়ে আঁকরে রাখতে চায়।
অহনা তাকিয়ে আছে জানালার বাইরে। এই ক্লিনিকের জানালার বাইরের দৃশ্যটা অনেক সুন্দর। সে মুগ্ধ হয়ে কুয়াশা দেখছে। যেন অনেকদিন কুয়াশা দেখেনা। তার শরীরটা অনেক দুর্বল। আজ কেন জানি খানিকটা সুস্থ লাগছে। এই সুস্থতাই শেষ সুস্থতা কিনা কে জানে। অনেকটা আগুন নিভে যাওয়ার আগে জ্বলে ওঠার মতো। বাতাসের সো সো শব্দ শোনা যাচ্ছে। কে যেন ফিসফিস করে বলছে, "বিশ্বাস করে হাতটা ধরে দেখো। একটিবার। শুধু একটিবার বিশ্বাস করো।" চাদরের ভিতর থেকে সে হাতটা বের করতে গিয়ে ভ্রু কুচকে ভাবল, "তার কি কোনো আফসোস আছে জীবনে? যে আফসোসের জন্য সে হাত বাড়ানোর সাহস পাচ্ছে না?"
বিঃদ্রঃ লেখাটা একজনকে উৎসর্গ করলাম। কেউ একজন আমাকে বলল, তার (লেখাটা যাকে উৎসর্গ করেছি) কষ্টটা অনুভব করতে। কারো কষ্ট কি আদৌ অনুভব করা যায়? যদি যায়, তাহলে একটা লিস্ট করতে হবে। অনেক মানুষের কষ্ট অনুভব করতে হবে। সময় অনেক অল্প। কষ্ট অনুভব না করলে সুখের মর্ম বুঝবো কি করে?
Comments
Post a Comment