Skip to main content

ফ্রেমে বন্দী বিকেল

রাশেদকে ঘুম থেকে তোলা যাচ্ছে না। দুইদিন ধরে সে ঘুমিয়ে আছে। মেসের বড় ভাই, মিরাজ তাকে ডেকেই যাচ্ছে। না পেরে এক জগ পানি এনে রাশেদের গায়ে ঢেলে দিলো। রাশেদ ভ্রু কুচকে আধো চোখে মিরাজের দিকে তাকালো। মিরাজ বললো, “তোকে দুই দিন ধরে ডাকতে ডাকতে পাগল হয়ে গেছি। ওঠ। দিন দুনিয়ায় কি তোকে ঘুম থেকে ডেকে তোলা ছাড়া আমার আর কোনো কাজ নেই?”বলেই চেয়ার টেনে নিয়ে রাশেদের সামনে বসলো। রাশেদ কাঁচা ঘুম চোখে উঠে বসলো। ঝিমাতে ঝিমাতে বলল, “আমাকে ডেকে তোলা কি খুব দরকার ছিল? আমি কি আপনাকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম?”

মিরাজ বলল, “দরকার ছিল। এক ভদ্রলোক দুইদিন ধরে তোকে খুঁজছে। গত পরশুদিন আসছে। বিদায় করেছিলাম, আবার এসেছে। আমাকে অতিষ্ঠ করে ফেলছে। তার সাথে দেখা কর। কি দরকার দেখ। দেখে বিদায় কর। আমি গেলাম। আবার ঘুমাস না যেন।”

রাশেদ বলল, “কোথায়?”

“আমার রুমে আছে।” বলেই মিরাজ বের হয়ে গেলো। রাশেদ ভেজা কাপড় পাল্টে, হাই তুলতে তুলতে মিরাজের রুমে গেলো।

সাদা পাঞ্জাবী পড়া একজন ভদ্রলোক চেয়ারে বসে আছেন। বয়স ৬০ এর কাছাকাছি হবে। মুখে কাঁচাপাকা দাড়ি। দীর্ঘ ক্লান্তভাব। সেই ক্লান্তি ভাব কাটিয়ে রাশেদকে দেখে সে খুশি হয়েছে এমন একটা ভাব আনার বৃথা চেষ্টা করে কিছু বলতে চাইলো। রাশেদ হাতের ইশারায় তাকে থামালো। টেবিলে এক গ্লাস পানি ছিল। সম্ভবত ভদ্রলোকের জন্য রাখা। রাশেদ গ্লাসটা হাতে নিয়ে, মুখে পানি দিল। বাকি পানিটুকু খেয়ে ফেলল। হাতের কাছের চেয়ারটা টেনে নিয়ে ভদ্রলোকের সামনে বসলো। রাশেদ আবারো হাই তুলতে তুলতে বলল, “বলেন তো, কি ব্যাপার? আমার সাথে দেখা করার জন্য নাকি দুইদিন ধরে বসে আছেন।” 

ভদ্রলোক বেশ ভরাট গলায় বললেন, “আমার নাম মোহাম্মদ মতিউর রহমান। আমি সিরাজগঞ্জ থেকে আসছি। আমার মেয়ের নাম”

রাশেদ আবার তাকিয়ে হাতের ইশারায় থামিয়ে বলল, “আপনার বৃত্তান্ত জানার প্রয়োজনবোধ আপাতত করছি না। আমার কাছে কেন এসেছেন, সেটা বলুন। আমার কাছে কারো প্রয়োজন থাকতে পারে, সেটা জানা ছিল না।”

– হ্যাঁ, আপনাকে আমার সাথে আমার গ্রামের বাড়ীতে যেতে হবে।
কেন?
– আমার মেয়ের সাথে দেখা করার জন্য।
আপনার মেয়ের সাথে আমি কেন দেখা করবো?
– আমার মেয়ে আপনার অনেক বড় একজন ভক্ত। আমি তাকে একটু খুশি করার জন্য আপনাকে আমার সাথে নিয়ে যেতে চাই।

এতটুকু শুনে রাশেদের চোখে যে রাজ্যের ঘুম ছিল, সেটা কেটে গেছে। ছোট খাট একটা ধাক্কা বুকে এসে লেগেছে। সে ভাবছে, আমি লেখালেখি করি এটা ঠিক, কিন্তু আমার তো কোনো বই নেই। ইন্টারনেটে একটা ব্লগে কিছু লেখা আর্কাইভ করে রাখা আছে, যা আজ অব্ধি কেউ পড়েছে কিনা সন্দেহ। সেই লেখা যদি কেউ পড়েও, কারো ভালো হয়ত লাগতে পারে, কিন্তু ভক্ত বনে যাওয়া? অসম্ভব। রাশেদ কিছুটা দ্বিধা নিয়ে ভ্রু কুচকে বলল, “আপনি কি যে কোনো ভাবেই হোক, আমার সাথে মশকরা করছেন?”

“আমাকে দেখে আপনার মনে হবার কথা না যে আমি আপনার সাথে মশকরা করছি। তারপরেও পরিষ্কার ভাবে বলছি, আমি আপনার সাথে কোনো রকম মশকরা করছি না এবং আপনাকে আমার সাথে যেতেই হবে। আপনি না বললে, আমি মানবো না।”

– আপনার মেয়ে কি করে?
গত বছর অনার্স শেষ করেছে। এখন ঘরেই থাকে। ছবি আঁকে। বই পড়ে।
– আপনি আমাকে পেলেন কিভাবে?
বেশ কষ্টেই পেয়েছি। ছোট ছেলেকে বলেছিলাম। সে নেট ঘেটে আপনার একটা ফোন নাম্বার জোগাড় করে দিয়েছে। কল করেছিলাম, আপনি ধরেননি। মিরাজ নামে একজন ধরেছিল। তারপর এখানে।
– দেখুন, আমি লেখালেখি ছেড়ে দিয়েছি।
এবার মতিউর সাহেব হাতের ইশারায় রাশেদকে থামিয়ে দিয়ে বলল, “আমি আগেই বলেছি, আপনার কোনো কথা আমি শুনবো না। আপনাকে আমার গ্রামের বাড়ীতে যেতেই হবে।”
– ঠিক আছে। বসেন তাহলে, আমি একটু ফ্রেশ হয়ে আসছি।

বলেই রাশেদ উঠে দাড়ালে মতিউর সাহেব বলেন, “রাশেদ, আমি এখন আপনাকে আমার সাথে নেবো না। আপনি একজন বয়স্ক মানুষকে দুইদিন ধরে বসিয়ে রেখেছেন। আমি এখন চলে যাবো। ঠিকানা ও সময় লিখে রেখে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমার গ্রামের বাড়ি চলে আসবেন।” রাশেদের মেজাজ খারাপ হতে থাকে, বিরক্ত চোখে তাকিয়ে থাকে মতিউর সাহেবের দিকে। তাতে কোনো লাভ হয়না। মতিউর সাহেব উঠে রাশেদের বিরক্ত চেহারা উপেক্ষা করে দাড়িয়ে টেবিলে একটা কাগজ রেখে ঘর থেকে বের হয়ে যায়।

রাশেদ কাগজটি হাতে নিয়ে সময় আর ঠিকানাটা একবার দেখে পকেটে ঢুকায়, তারপর আবার তার রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।

রাশেদ এখন যে বাড়িটির সামনে দাড়িয়ে আছে, সেটাকে ছোট খাটো একটা রাজপ্রাসাদ বলা চলে। নিশ্চিত করে বলা যায় যে বাড়ির পিছনে একটা পুকুর আছে। কপাল ভালো থাকলে সেটা মার্বেল পাথর দিয়ে বাধানো। বাড়ির পিছনে যাই থাকুক, বাড়ির সামনের অংশ দেখলে বোঝাই যায় যে মতিউর সাহেব শৌখিন মানুষ। শখ করে বাড়ি বানিয়েছেন। আশেপাশে কাউকে না দেখে রাশেদ সরাসরি বাড়ির ভিতরে ঢোকে এবং কৌতূহল মেটানোর জন্য বাড়ির পিছনে চলে যায়।

পুকুর পাড়ে একটা মেয়ে বসে আছে। পাশে একটা হুইল চেয়ার। মেয়েটি মুখে হাত দিয়ে কি যেন ভাবছে। রাশেদের ছোট একটা ভুল হয়েছে। পুকুর পাড় বাধানো ঠিকই কিন্তু সেটা মার্বেল পাথরের না। রাশেদ মেয়েটার কাছে গিয়ে বলল, “হ্যালো, মতিউর রহমান সাহেবকে খুঁজছিলাম। বলতে পারেন, তাকে কোথায় পাবো?”

মেয়েটি পিছন ফিরে কিছুক্ষণ ভ্রু কুচকে তাকিয়ে থেকে হাসি হাসি মুখ করে বলে, “আসসালামুয়ালাইকুম লেখক সাহেব, বাবা তো বাড়ি নেই। আপনি এখানে বসতে পারেন। বাবা চলে আসবে।”
–  ধন্যবাদ। আপনিই মতিউর রহমানের মেয়ে তাহলে। তার কথা অনুযায়ী আমার ভক্ত। হাহাহা।
হাসছেন কেন? আপনার লেখার ভক্ত কেউ হতে পারবে না?
–  না, আমি সেটা বলতে চাইনি। ব্যাপারটা আমার কাছে একটু অদ্ভুত লাগছে। আমি এমন কোনো লেখক নই যে আমার লেখা পড়ে কেউ আমার ভক্ত হবে।
আমি হয়েছি। আপনার “শ্রীকান্তের শেষ কাব্য” গল্পটা পড়েই মুগ্ধ হয়েছি। তারপর থেকে আপনার সব লেখা পড়েছি। আপনার ভক্ত হতে বাধ্য হয়েছি। অসাধারণ লেখেন আপনি। আপনি আপনার ব্যাক্তিগত ব্লগে সর্বমোট ৪৩ টা গল্প লিখেছেন। সেসব দিয়ে দুই তিনটা বই বের করতে পারতেন। বই বের করেননি কেন?
–  বের করা হয়নি। কারন, আমার নিজের লেখা পড়ে আমি নিজেই সন্তুষ্ট না। পাঠক এসব পড়ে বিরক্ত হবে ভেবে সাহস পাই না।
“আপনার শেষ লেখা প্রায় ছয় মাস আগে। এর পরে আর লেখেননি। কেন?” রাশেদ মেয়েটির দিকে তাকিয়ে থাকে, মেয়েটার চোখে কৌতূহল। চাপা আনন্দ উত্তেজনা। মেয়েটা কি আসলেই তার লেখা পড়ে মুগ্ধ হয়েছে? তার জন্যই কি এই আনন্দ উত্তেজনা? এই কৌতূহল? রাশেদ বলল, “আপনি আপনার নামটা বলেননি।”
ওহ। সরি। আমার নাম মৃন্ময়ী। মৃন্ময়ী রহমান।
–  আপনার পায়ে কি হয়েছে?
দুর্ঘটনা। পা দুটো মৃত। মৃত পা দুটো নিয়ে বেঁচে আছি।
– মাস ছয়েক আগে আমার প্রেমিকা মারা যায়। তারপর থেকে লেখালেখি বন্ধ করেছি। ইচ্ছে করে যে করেছি তা না। এখন আর গল্পরা মাথায় আসে না। গল্পরা গল্প করে না। চরিত্ররা অভিনয় করে না। তাই আর লেখাও হয় না। আপনি যদি সত্যিই আমার লেখা পড়ে মুগ্ধ হয়ে থাকেন। তাহলে আমি কৃতজ্ঞ।
আমার বাবা আপনাকে আমার সাথে কেন দেখার করার জন্য বলেছে জানেন?
–  না। কেন?
আজ আমার জন্মদিন। বাবা চেয়েছিল, বিশেষ কিছু উপহার দিতে। আজ আমার জন্মদিনে আপনিই আমার উপহার। আমি অবশ্য জানতাম না কিছুই। আপনাকে দেখেই আমি সারপ্রাইজড হয়েছি এবং সাথে সাথেই বুঝতে পেরেছি এটা বাবার কাজ।
– শুভ জন্মদিন মৃন্ময়ী। আচ্ছা, আমি যদি না আসতাম? আর আপনি আমাকে চিনলেন কিভাবে?
তাহলে কিছু করার ছিল না। তবে বাবার বিচার বুদ্ধি ভালো। তিনি জানতেন, আপনি আসবেন। আপনার ব্লগে আপনার ছবি আছে। ব্লগ পড়তে পড়তে এতবার আপনার ছবিটা সামনে এসেছে। দেখার সাথে সাথেই চিনে ফেলেছি।

সময় বিকাল। রাশেদ আর মৃন্ময়ী এখন চুপচাপ বসে পুকুরে ফুটে থাকা শাপলা দেখছে। লাল শাপলার উপর কমলা রঙের একটা আলো এসে পড়েছে। এখন এটাকে আর শাপলা বলা চলে না। এই কিছুক্ষণের জন্য ফুলটার নাম পরিবর্তন করা দরকার।

রাশেদ ভাবছে, আচ্ছা, আমি যা ভাবছি, মৃন্ময়ীও কি তাই ভাবছে? সেটা তো কখনই সম্ভব না। আমার মাথায় একজন চরিত্র এসে দরজা নাড়ছে। দরজা খুলবো কি খুলবো না, বুঝতে পারছি না। এখন দরজাটা খুললেই ঝামেলা। লিখতে বসতে হবে। এর থেকে শাপলা ফুলটা দেখতে ভালো লাগছে। আসলে শাপলা ফুল বাহানা। মৃন্ময়ীর পাশে বসে থাকতে ভালো লাগছে। বিনা কারনে কাউকে ভালো লাগাটা ভয়ঙ্কর। মানুষের জীবনের বড় বড় বিপদ গুলো এভাবেই হয়। একবার কাউকে বিনা কারনে ভালো লেগে গেলে তার কাছ থেকে মনকে আর সরানো যায় না। রাশেদের মনে হচ্ছে সময় আটকে গেছে। মৃন্ময়ীর দিকে তাকাতে ইচ্ছে হচ্ছে। ইতইস্ত করে রাশেদ মৃন্ময়ীর দিকে তাকালো। মৃন্ময়ী আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। কন্যা সুন্দর আলো এসে মৃন্ময়ীর গাল ভিজিয়ে দিয়ে গেছে। সময় আটকে গেছে। ভালোলাগার সময় বুঝি এভাবেই আটকে যায়। ইস্‌, সময়টা যদি এভাবে সারাজীবনের জন্য আটকে যেত। মন্দ হতো না। অন্তত নীলার অতীত কাঁধে চেপে থাকতো না। এই বাড়িতে ঢোকার সাথে সাথেই নীলা অনুপস্থিত। গত ছয় মাস ধরে নীলা একভাবে কাঁধে চেপে আছে। নামছে না। সারাক্ষণ তাঁর স্মৃতি তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। মধুর সেসব স্মৃতি থেকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।

রাশেদ শাপলা ফুলগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে বলল, “আমার প্রেমিকার নাম নীলা। ওর ক্যান্সার হয়েছিল। ক্যান্সারে মারা গেছে। চাপা একটা যন্ত্রনা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। আর ভালো লাগছে না। অধৈর্য্য হয়ে গেছি যন্ত্রনা চেপে নিয়ে বেঁচে থাকতে থাকতে।”

মৃন্ময়ী বলল, “যন্ত্রনাকে ছুটি দেন। অথবা এক কাজ করেন, যন্ত্রনা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আবার লেখালেখি শুরু করেন। আশেপাশে তাকান। এমন কাউকে খুঁজে বের করেন যাকে দেখলে আপনার চরিত্ররা আবার অভিনয় করতে চাইবে।”

মৃন্ময়ী আর রাশেদ এখনো শাপলা ফুলগুলোর দিকে তাকিয়ে আছে। সময় আটকে গেছে। ফ্রেমে বন্দী হয়ে আছে রাশেদ, মৃন্ময়ী, পড়ন্ত বিকাল, কিছু শাপলা আর একটি হুইল চেয়ার।

Comments

Popular posts from this blog

রহস্যময় ভালবাসা

ভুমিকা ভুমিকা সাধারনত উপন্যাসের হয় কিংবা রচনা জাতীয় কোনো লেখায় হয়। একটা গল্পের জন্য ভুমিকা লেখা হাস্যকর। তবুও লিখলাম। এই গল্পের সাথে বাস্তবের কোনো মিল নেই। এটা শুধুই কল্পনা দিয়ে লেখা। তবে নাম গুলোর অস্থিত্ত্ব আছে। ভুতের গল্প লিখতে চেয়েছিলাম। যে গল্প মাথায় ছিল সেটা তেমন ভয়ঙ্কর বলে আমার মনে হলো না। কিংবা আমি হয়ত ভয়ঙ্কর কিছু লিখতে পারতাম না। তাই লিখলাম না। আশা করি এই গল্পটা পড়ে খুব বেশি বিরক্ত হবেন না। যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে ধন্যবাদ। ভালো না লাগলেও ধন্যবাদ।  ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরী টুটপাড়া ঘোষের ভিটা, খুলনা ২০.০৯.২০১২  উৎসর্গ  একটা মানুষকে কি দুইবার উৎসর্গ করা যায়? এইটা সেই মানুষটার জন্য, যার কাছেই শুধুমাত্র আমি একজন লেখক। যার কাছে আমার ভালো কাজেরও মূল্য আছে, খারাপ কাজেরও মূল্য আছে। আমার অদ্ভুত আচরণে সে বিরক্ত হয়, আসলে সে মুগ্ধ হয় বলে আমার বিশ্বাস।  মানুষটা আমাকে অনেক ভালোবাসে, এত কেন ভালোবাসে, কিভাবে ভালোবাসে, আমি কিছুই জানিনা। আমার প্রিয় হলুদিয়া পাখি একটা মেয়ে কতটা সুন্দর হলে একটা ছেলে মেয়েটার দিকে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে? একটা মেয়ে ঠিক কতটা সুন্দর হলে

Veer Zaara

  Spoiler Alert শুরুতেই ইয়াশ চোপড়ার ম্যাজিকাল কণ্ঠে কবিতা। কবিতা শেষ হওয়া মুহুর্তেই সনু নিগম আর লতা গেয়ে ওঠে আমার প্রিয় সব থেকে ম্যাজিকাল গানটা, “কিউ হাওয়া আজ ইউ গা রা হি হে”। সনুর কণ্ঠের সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে স্ক্রিনে চলে আসে আমার প্রিয় সুপারস্টার শাহরুখ খান। সাদা জামা পড়ে সাদা নৌকায় ভেসে প্রকৃতির সাথে মিশে যাওয়ার দৃশ্য আমাকে আজও অনুপ্রেরণা দেয় প্রকৃতির সাথে এভাবে একাত্বতা ঘোষনা করার। মুভির শুরুতেই এই গান মনের মধ্যে একটা প্রশান্তি দেয়। মুভি দেখার আগ্রহ কয়েকগুন বাড়িয়ে দেয়।   এই গান শেষ হওয়া মুহুর্তেই দেখা যায়, বৃদ্ধ বীর প্রতাপ সিং স্বপ্নে জারা হায়াত খানকে গুলি খেতে দেখে ধরফর করে ঘুম ভেঙ্গে উঠে বসে। শাহরুখ খানের এই বৃদ্ধ চরিত্র তার ক্যারিয়ারে উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে থাকবে আজীবন। ২২ বছর ধরে বীর প্রতাপ সিং নিজেকে জেলে বন্দী করে রেখেছে। এই ২২ বছরে কারো সাথে একটা কথা পর্যন্ত বলেনি। শুধুমাত্র জারার সন্মান রক্ষার্থে। কেউ তার গল্প জানেনা। হঠাৎ একদিন সামিয়া সিদ্দিকি নামের একজন হিউমান রাইটস লয়ার এগিয়ে এলো এই বীর প্রতাপ সিং এর গল্প জানার জন্য। ২২ বছর ধরে যেই মানুষটাকে সবাই কয়েদী নম্বর ৭৮৬ ব

Anveshanam (2020)

No Spoiler মুভির নাম Anveshanam , এটি একটি মালায়ালাম মুভি। মুভিতে একটা দৃশ্য দেখে বহু বছর পরে বুক কেঁপে উঠেছিলো। অত্যন্ত চমৎকার একটা মুভি। সিরিয়াল কিলার রিলেটেড থ্রিলার মুভি দেখতে দেখতে বিরক্ত ধরে গেলে চট করে এই হাসপাতাল পরিবেশে বানানো থ্রিলার মুভিটি দেখে ফেলুন। থ্রিলার মুভির নানান ধরণ আছে। আমার কাছে এই ধরণের থ্রিলার বেশি ভালো লাগে। সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে এর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক। দূর্দান্ত লেগেছে। প্লট অনুযায়ী পারফেক্ট মিউজিক।   আমি প্রথমে ট্রেইলার দেখেছিলাম। ট্রেইলার অর্ধেক দেখেই আমার আগ্রহ জাগে এবং সাথে সাথে ডাউনলোড দিয়ে দেখতে বসে গেছি। আপনারা চাইলে ট্রেইলারটা দেখে আসতে পারেন। আগ্রহ জাগানোর জন্য প্লট সম্পর্কে একটু বলি। হাসপাতালে একটা বাচ্চা ভর্তি হয়েছে। বলা হচ্ছে বাচ্চাটা এক্সিডেন্ট করেছে। পুলিশ এসে ইনভেস্টিগেশন শুরু করলে দেখা যায় বাচ্চার বাবা মা থেকে শুরু করে প্রত্যেকে প্রত্যেকের জায়গা থেকে মিথ্যা কথা বলছে। কিছু একটা লুকাচ্ছে। কি লুকাচ্ছে? সেটাই রহস্য। এই রহস্যে জানতেই মুভিটা দেখতে হবে।   এই মুভির কোনো রিভিউ আমার চোখে পড়েনি। কিন্তু এই মুভি নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা করা উচি