Posts

Showing posts from 2014

আয়নার ওপাশে

আবীর তার ঘরের দরজার ওপাশ থেকে দরজায় ধাক্কা দিচ্ছে আর তার মাকে ডাকছে। আবীর বলছে, “মা, দরজা খোলো, মা।” আবীরের মা, বাবা, দুই বোন এবং এক ভাই সবাই সেদিন বাসায় ছিল। সবাই আবীরের দরজার দিকে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আবীর দরজা নাড়ছে প্রায় পনের মিনিট হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ আগে আবীরের ছোট বোন আচল অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছে। আবীরের বড় বোন অহনা আচলের চোখে মুখে পানি ছিটাচ্ছে। আবীরের বড় ভাই অনন্ত বলল, “মা, তুমি দাড়াও, আমি দরজা খুলছি।” তখন আবীরের মা মরিয়ম জামিলা বলল, “না। আমিই দরজা খুলবো।” মরিয়ম জামিলা দরজার কাছে গিয়ে দরজা খুলল আর সাথে সাথেই আবীর ঘর থেকে বের হয়ে এলো। আচলের ততক্ষণে জ্ঞান ফিরেছে। সবাই বিস্ময় নিয়ে আবীরের দিকে তাকিয়ে আছে। মরিয়ম জামিলা চিৎকার করে কাঁদতে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন। প্রায় তিন মাস আগে আবীর হঠাৎ করে উধাও হয়ে গিয়েছিলো। কেউ আবীরকে কোথাও খুঁজে পায়নি। তন্নতন্ন করে খোঁজা হয়েছিলো। কেউ কিছু বলতে পারিনি। শেষমেশ উপায় না দেখে সবাই আশা ছেড়ে দিয়েছিলো। যে হারিয়ে যেতে চায় তাকে কেউ খুঁজে পায়না, এই ভেবে। কিন্তু এখন সবার প্রশ্ন হল, আবীর বন্ধ ঘরে কোথা থেকে এলো? নাকি সে এই তিন মাস ঘ...

রহস্যময় ভালবাসা

ভুমিকা ভুমিকা সাধারনত উপন্যাসের হয় কিংবা রচনা জাতীয় কোনো লেখায় হয়। একটা গল্পের জন্য ভুমিকা লেখা হাস্যকর। তবুও লিখলাম। এই গল্পের সাথে বাস্তবের কোনো মিল নেই। এটা শুধুই কল্পনা দিয়ে লেখা। তবে নাম গুলোর অস্থিত্ত্ব আছে। ভুতের গল্প লিখতে চেয়েছিলাম। যে গল্প মাথায় ছিল সেটা তেমন ভয়ঙ্কর বলে আমার মনে হলো না। কিংবা আমি হয়ত ভয়ঙ্কর কিছু লিখতে পারতাম না। তাই লিখলাম না। আশা করি এই গল্পটা পড়ে খুব বেশি বিরক্ত হবেন না। যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে ধন্যবাদ। ভালো না লাগলেও ধন্যবাদ।  ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরী টুটপাড়া ঘোষের ভিটা, খুলনা ২০.০৯.২০১২  উৎসর্গ  একটা মানুষকে কি দুইবার উৎসর্গ করা যায়? এইটা সেই মানুষটার জন্য, যার কাছেই শুধুমাত্র আমি একজন লেখক। যার কাছে আমার ভালো কাজেরও মূল্য আছে, খারাপ কাজেরও মূল্য আছে। আমার অদ্ভুত আচরণে সে বিরক্ত হয়, আসলে সে মুগ্ধ হয় বলে আমার বিশ্বাস।  মানুষটা আমাকে অনেক ভালোবাসে, এত কেন ভালোবাসে, কিভাবে ভালোবাসে, আমি কিছুই জানিনা। আমার প্রিয় হলুদিয়া পাখি একটা মেয়ে কতটা সুন্দর হলে একটা ছেলে মেয়েটার দিকে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে? একটা মেয়ে ঠ...

বিশ্বাস করে হাতটা বাড়াও

আহনাফ একটা বট গাছের নিচে বসে আছে। সময় সন্ধ্যা। চারিদিকে কুয়াশায় ছেয়ে গেছে। কালো একটা চাদর গায়ে দিয়ে সে বসে আছে, বট গাছের গুড়িতে। এই বট গাছের বয়স কত হতে পারে, তা তার জানা নেই। তবে দেড়শ বছর হবার সম্ভবনা তো আছেই। আহনাফের সাথে বসে আছে আহনাফের এক ভাই। বয়সে ছোট। নাম সুজন। সে এই প্রথম এখানে এলো। আসার পর থেকেই সে মুগ্ধ। পৃথিবীতে যে এত সুন্দর একটা জায়গা থাকতে পারে, এত সুন্দর একটা দৃশ্য হতে পারে, সেটা তার ধরনার বাইরে ছিল। সুজন বলল, "আচ্ছা ভাইয়া, তুমি কি এখানে রোজ আসো?" আহনাফ বলল, "গত চার বছর ধরে প্রতিদিন আসি।" - বলো কি? কেন? এই জায়গা তোমার এত ভালো লাগে? -- হ্যাঁ, ভালো তো লাগেই। কিন্তু তুই কি একটা বিষয় লক্ষ্য করে দেখেছিস? - কি? -- বট গাছটা অসুস্থ। - তো? -- তো, আমি এখানে এসে প্রতিদিন প্রার্থনা করি যেন বট গাছটা সুস্থ হয়ে যায়। - তাই বলে গোটা চার বছর ধরে? - হ্যাঁ। এই বট গাছটা একটা মানুষের খুব প্রিয় ছিল। মানুষটা একদিন অসুস্থ হয়ে পড়ে, তারপর থেকে এই গাছটাও অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর তার পর থেকে আমি প্রার্থনা করি যেন বটগাছটা সুস্থ হয়। হয়ত এই গাছটা সুস্থ হলে মানুষটাও সুস্থ...

বৃত্তালাপ

এটা কোনো গল্প না। আমি প্রায় এমন হাবিজাবি চিন্তা করি। উর্বর মস্তিষ্কের কল্পনা। এর কোনো ভিত্তি নেই এবং বৃত্তালাপ বলার কারন, যখন এসব ভাবি মনে হয় আমি কোনো বৃত্তের মাঝেই আছি। সবকিছুই বৃত্ত। এমনকি পৃথিবীটাও। আমি ছাদে শুয়ে আছি। আমার আত্মা আমার শরীরে নেই। কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। আমার ঠিক পাশে তাহসান গীটার হাতে বসে আছে। লাল রঙের জামদানী পড়ে তার সাথে মিথিলাও বসে আছে। তারা গান গাইছে। আমি মুগ্ধ হয়ে তাদের গান শুনছি। যত দূরে থাকো, এত কেন কাছে শেষ স্পর্শ তোমার, আজও আছে তারা গান গাইছে। আর আমি তাকিয়ে আছি চাঁদের দিকে। চাঁদের সাথে মেঘের ধরা-ছোঁয়া খেলাটাই আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। হটাৎ আমাদের মাঝে রবি ঠাকুর উপস্থিত। তাহসান আর মিথিলা গান বন্ধ করে হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে। চাঁদের আলোয় স্পষ্ট রবি ঠাকুরকে বোঝা যাচ্ছে। রবি ঠাকুর বললেন, "সাগর, তোমাদের বাড়ির সিঁড়িঘরে আলো নেই কেন?" আমি বললাম, "চাঁদের আলোর সামনে নগণ্য বাল্বের আলো মানায় না যে!" তিনি বললেন, "আমি রবীন্দ্রনাথ বলে, আমার সামনে সস্তা সাহিত্য কপচাপে না। তোমাদের অন্ধকার সিঁড়িঘরে আমি উসঠা খেয়ে পড়ে গেছি। কালই আলোর ব্যাব...